ইনকগনিটো মোড কি? Incognito মোডের ব্যবহার।
কম্পিউটার বা মোবাইল ইন্টারনেট ব্রাউজিং করতে গেলে ব্রাউজারের ভেতর ইনকগনিটো বা প্রাইভেট উইন্ডো/মোড পাওয়া যায়। এই ইনকগনিটো মোড কি? Incognito Mode এর কাজ কি? কখন কিভাবে এই ব্রাউজারের এই ফিচারটি আমরা কাজে লাগাতে পারি সেই সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আর্টিকেল টি আপনার জন্য।
ইনকগনিটো মোড কি? (What is incognito mode?)
ইনকগনিটো মোড হচ্ছে ব্রাউজারে থাকা একটি বিশেষ প্রাইভেট ট্যাব বা উইন্ডো যেটি মাধ্যমে ইন্টারনেটি ব্রাউজিং করলে আপনারে ডিভাইসে কোন ধরনের ব্রাউজিং হিস্টোরি, কুকি, সেশন, ক্যাশ বা অন্যান্য ইনফরমেশন জমা হবে না। আপনার ব্রাউজিং শেষ হয়ে গেলে ব্রাউজারটি টি ক্লোজ করে দিলে সব যেসব ব্রাউজিং হিস্টোরি, কুকি, সেশন, ক্যাশ টেম্পোরারি স্টোর হয়েছিল সেগুলো ডিলিট হয়ে যাবে ফলে আপনার ঐ ডিভাইসে এই সকল জিনিস গুলো থাকলো এবং আপনি নিরাপদ থাকতে পারলেন কারণ ঐগুলো আপনার ডিভাইসে অন্য কেউ দেখতে পারবে না।
ইনকগনিটো ব্যবহার ও বিস্তারিত
আপনি আমি যখন কোন ব্রাউজারের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি সেটা হোক ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ অথবা মোবাইল সবকিছুতেই আমরা কি ব্রাউজিং করছি, কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছি, কোন কোন ওয়েবসাইটে লগিন করে রাখছি, পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখছি ইত্যাদি বিষয় গুলো ব্রাউজারে লোকালি স্টোর করা হয়ে থাকে। ব্রাউজারে এই উক্ত ইনফরমেশন গুলো কুকিজ, ক্যাশ, সেশন ইত্যাদির মাধ্যমে এক বা একাধিক ফাইলে জমা রাখা হয় ফলে একবার ব্রাউজার ব্যবহার করা পর পরবর্তী যখন আপনি ব্রাউজারে আপনার পছন্দের ওয়েবসাইটে ঢুকে থাকেন তখন লগিন অবস্থায় বা যা করে রেখেছেন সেই অবস্থায় পেয়ে থাকেন।
ইচ্ছা করলে আপনি কি কি ব্রাউজিং করছে প্রতিদিনের হিস্টোরি ব্রাউজিং হিস্টোরি থেকে দেখতে পারেন। আপনি ব্রাউজারে যেসব জিনিস সার্চ করছেন দেখছেন ঐগুলো ট্রাক ও স্টোর হয়ে থাকে ফলে যখন ঐ কম্পিউটার যখন অন্য কেউ ব্যবহার করবে তখন আপনি সেই জিনিস গুলো দেখতে পারবেন। এছাড়াও আমরা ব্রাউজারে যে সার্চ গুলো দিয়ে থাকি সেই গুলো ট্রাকিং করা হয় বলে পরবর্তী ঐ ধরনের বিজ্ঞাপন ফেসবুক সহ অন্যান্য ওয়েবসাইট গুলো দেখতে পাই।
অপরি দিকে আমরা যখন ইনকগনিটো মোড বা প্রাইভেট মোড উইন্ডো ওপেন করে ব্রাউজিং করি তখন ব্রাউজারে নতুন একটি সেশন তৈরী করা হয় যেখানে আপনার আগের কুকিজ, হিস্টোরি বা ক্যাশ ইত্যাদি গুলো থাকে না যার ফলে একদম নতুন ব্রাউজার যেমন পেয়ে থাকেন কোন কিছু লগিন না থাকা অবস্থায় ঠিক ঐ ধরনের ইন্টারফেস পাবেন। আর আপনি এই নতুন সেশনে যেসব ব্রাউজিং করেছেন কুকিজ, ক্যাশ ইত্যাদি জমা হয়েছে সেইগুলো টেম্পোরারি ভাবে জমা হয়ে থাকে যখন আপনি ব্রাউজারটি ক্লোজ করে দেন তখন ঐ ইনফরমেশন গুলো অটো ডিলিট হয়ে যায় আর আপনি থাকেন নিরাপদ।
এইভাবে আপনার ডিভাইসে আপনি কি ব্রাউজিং করছেন না করছেন সেই গুলো ঐ ডিভাইসে সব গোপন থাকে। ব্রাউজারে থাকা ইনগকগনিটোড মোড কি? আশা করি বুঝে গিয়েছেন ইন্টারনেট নিরাপদ ব্রাউজিং জন্য এই ফিচারটি ব্রাউজারে থাকে এখন অনেক জরুরি হয়েছে আর এমন পাওয়া কঠিন যেগুলোতে ইনকগনিটো মোড নেয়।
ইনকগনিটো মোডের সুবিধা ও যেভাবে ব্যবহার করতে পারেন
- ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করলে আপনার ব্রাউজিং হিস্টোরি স্টোর হবে না।
- অনেক সময় আছে আমাদের অন্যের কম্পিউটারে বা মোবাইল নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা অন্য কোন অ্যাকাউন্ট লগিন করার প্রয়োজন পড়ে থাকে। কাজ কাম করা শেষ অনেক সময় অনেকেই লগআউট করতে ভুলে যায় এই ক্ষেত্রে কাজে আসবে ইনকগনিটো মোড।ইনকগনিটো ওপেন করে কিছু ব্রাউজ করলে বা কোন অ্যাকাউন্টে লগিন করে রাখা অবস্থায় ইনকগনিটো মোড টি ক্লোজ করে দিলেই সব ডিলিট হয়ে যাবে মানে অটো লগআউট কেউ অ্যাক্সেস করতে পারবে না।
- অনেক সময় কোন ওয়েবসাইট ফ্রেশভাবে লোড করার প্রয়োজন পড়ে থাকে সেই জন্য ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করতে পারেন।
- ধরুন আপনার একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট লগিন আছে ব্রাউজারে আরেকটি লগিন জিমেইল লগিন করবেন কিন্তু কিছু সময়ের সাথে বা ঐটার সাথে এটা মিশাইতে চাচ্ছেন না তখন ইনকগনিটো মোড ওপেন করে জিমেইল প্রবেশ করতে পারেন।
- এক সাথে দুটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা অন্য কোন অ্যাকাউন্ট চালাতে ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করতে পারেন।
ইনকগনিটো মোড সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা
ইনকগনিটো মোড আমাদের কে ব্রাউজিং করতে কিছু নিরাপত্তা দিয়ে থাকে ঠিকই কিন্তু এই নিয়ে কিছু ভুল ধারনা রয়েছে যার মধ্য অন্যতম ভুল ধারণা হলো ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করে ব্রাউজিং করলে কেউ ট্র্যাকিং করতে পারে না। এই ধারণা টি সম্পন্ন ভুল আমরা যতই ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করি না কেন আমরা কি ব্রাউজ করছি সেটা দেখা সম্ভব। আমরা যখন ইনকগনিটো মোড ওপেন করি তখন সেটির হোম স্ক্রিনে দেখিয়ে দেয় সেটা দ্বারা কি যায় আর কি করা যায় না। নিচের স্ক্রিনশট টি মনোযোগ সহকারে দেখুন।
ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করলে আপনার ব্রাউজিং হিস্টোরি সেভ করা হয় না, কুকিজ ও সাইট ডাটা ইত্যাদি অ্যাক্সেস বা স্টোর করা হয় না। তার ঠিক ডান পাশে দেখুন লেখা আছে এটি ব্যবহার করার সর্ত্তেও কি কি দেখতে পারবে। আপনি কোন ওয়েবসাইট ব্রাউজিং করছেন সেটি আপনার ISP মানে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার যার কাছে থেকে আপনি ইন্টারনেট সংযোগ নিয়েছেন সেটি হতে পারে ব্রডব্যান্ড অথবা মোবাইল সিম কোম্পানি। আপনি কি দেখছেন সেটি আমার জানা মতে তারা দেখতে পারে না কিন্তু তারা এটি অবশ্যই দেখতে পারে আপনি কোন ওয়েবসাইট বা লিংকে ব্রাউজ করছেন কখন করছেন ইত্যাদি বিষয় গুলো।
এটি কিভাবে হয় কারণ আমরা যে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করি না সেটি ব্রাউজার করার জন্য আমরা আমাদের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার কাছে হয়ে যাওয়া লাগে। এর মানে হচ্ছে আপনি যখন কোন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার জন্য ইন্টার করেন তখন সেই রিকুয়েষ্ট টি আপনার আইএসপির সার্ভার হয়ে আপনার নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের সার্ভারের রিকুয়েষ্ট যায় যার ফলে তারা এটি দেখতে পারেন। এই জিনিসটি সিকিউর করার জন্য আপনারা ভিপিএন সার্ভিস ব্যবহার করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
গুগল কিপ কি? বেস্ট নোট অ্যাপ রিভিউ। Google Keep